১৩
যিরূশালেমের বিনাশ ও যীশুর পুনরাগমন বিষয়ক শিক্ষা।
১ যীশু উপাসনা ঘর থেকে যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাঁর হয়ে একজন শিষ্য তাঁকে বলল, হে গুরু, দেখুন কি সুন্দর সুন্দর পাথর ও কি সুন্দর বাড়ি!
২ যীশু তাকে বললেন, তুমি কি এই সব বড় বড় বাড়ি দেখছ? এর একটা পাথর ও আর একটা পাথরের ওপরে থাকবে না, সবই ধ্বংস হবে।
৩ পরে যীশু যখন উপাসনা ঘরের সামনে জৈতুন পর্বতে বসেছিলেন তখন পিতর, যাকোব, যোহন ও আন্দ্রিয় তাঁকে গোপনে জিজ্ঞাসা করল,
৪ আপনি আমাদের বলুন, কখন এই সব ঘটনা ঘটবে? আর কোন চিহ্ন দেখে আমরা বুঝতে পারবো যে এই সব ঘটার সময় হয়ে এসেছে?
৫ যীশু এর উত্তরে তাদের বললেন, “সাবধান হও, কেউ যেন তোমাদের না ঠকায় ।
৬ অনেকে আমার নাম ধরে আসবে, বলবে, আমিই সেই খ্রীষ্ট, আর অনেক লোককে ঠকাবে।
৭ কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথাও যুদ্ধের গুজব শুনবে, তখন ভয় পেয়ো না; এ সব অবশ্যই ঘটবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।
৮ এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে, ও এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে উঠবে। জায়গায় জায়গায় ভূমিকম্প ও দূর্ভিক্ষ হবে; এই সবই যন্ত্রণা আরম্ভ মাত্র।
৯ তোমরা লোকদের থেকে সাবধান থাকো। লোকে তোমাদের বিচার সভার লোকেদের হাতে ধরিয়ে দেবে এবং সমাজঘরে তোমাদের মারা হবে; আর আমার জন্য তোমাদের দেশের রাজ্যপাল ও রাজাদের সামনে সাক্ষী দেবার জন্য দাঁড়াতে হবে।
১০ কিন্তু তার আগে সব জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করতে হবে।
১১ কিন্তু লোকে যখন তোমাদের ধরে বিচারের জন্য নিয়ে যাবে, তখন কি বলতে হবে তা নিয়ে ভেবো না; সেই সময় যে কথা তোমাদের বলে দেওয়া হবে, তোমরা তাই বলবে; কারণ তোমরাই যে কথা বলবে তা নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মাই কথা বলবেন।
১২ তখন ভাই ভাইকে ও বাবা সন্তানকে মৃত্যুতে সমর্পণ করবে; এবং সন্তানেরা মা বাবার বিপক্ষে উঠে তাদের হত্যা করাবে।
১৩ আর আমার নামের জন্য তোমাদের সবাই ঘৃণা করবে; কিন্তু যে কেউ শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে, সেই পরিত্রাণ পাবে।
১৪ যখন তোমরা দেখবে, সব শেষ করার সেই ঘৃণার জিনিস যেখানে থাকবার নয়, সেখানে রয়েছে যে পড়ে, সে বুঝুক, তখন যারা যিহূদিয়াতে থাকে তারা পাহাড়ি জায়গায় পালিয়ে যাক;
১৫ যে কেউ ছাদের উপরে থাকে, সে ঘর থেকে জিনিসপত্র নেবার জন্য নীচে না নামুক;
১৬ এবং যে জমিতে থাকে, সে নিজের পোশাক নেবার জন্য পিছনে ফিরে যেন না যায়।
১৭ সেই সময়ে যারা গর্ভবতী এবং যারা সন্তানকে বুকের দুধ পান করায় সেই মহিলাদের অবস্থা কি খারাপই না হবে!
১৮ প্রার্থনা কর, যেন এসব শীতকালে না ঘটে।
১৯ কারণ সেই সময় এমন কষ্ট হবে যা ঈশ্বরের জগত সৃষ্টির শুরু থেকে এই পর্যন্ত হয়নি, আর কখন হবে না।
২০ আর প্রভু যদি সেই দিনগুলির সংখ্যা কমিয়ে না দিতেন, তবে কোন মাংসই রক্ষা পেত না; কিন্তু ঈশ্বর যাদেরকে মনোনীত করে নিয়েছেন তাদের জন্য ঈশ্বর দিনগুলি কমিয়ে দিয়েছেন।
২১ আর সেই সময় যদি কেউ তোমাদেরকে বলে, দেখ, সেই খ্রীষ্ট এখানে, কিম্বা দেখ, ওখানে, তোমরা বিশ্বাস কোর না।
২২ কারণ ভণ্ড খ্রীষ্টেরা ও নকল ভাববাদীরা আসবে এবং অনেক আশ্চর্য্য কাজ করবে, যেন তারা ঈশ্বরের মনোনীত করা লোকদেরকেও ঠকাতে পারে।
২৩ তোমরা কিন্তু সাবধান থেকো। আমি তোমাদেরকে আগে থেকেই সব কিছু বলে রাখলাম।
২৪ সেই সময়ের কষ্টের ঠিক পরেই, সূর্য্য অন্ধকার হয়ে যাবে, চাঁদ আলো দেবে না,
২৫ তারাগুলো আকাশ থেকে খশে পড়ে যাবে এবং চাঁদ, সূর্য্য, তারা আর আকাশের সব শক্তি নড়ে যাবে।
২৬ সেই সময় লোকেরা মানবপুত্রকে মহা শক্তি ও মহা প্রতাপে সঙ্গে মেঘের ভেতর দিয়ে আসতে দেখবে।
২৭ আর তিনি তাঁর দূতদের পাঠিয়ে পৃথিবীর এবং আকাশের এক সীমা থেকে অন্য সীমা পর্যন্ত চারিদিক থেকে ঈশ্বরের সব মনোনীত করা লোকদের জড়ো করবেন।
২৮ ডুমুরগাছের গল্প থেকে শিক্ষা নাও; যখন তার ডালপালা নরম হয়ে তাতে পাতা বের হয়, তখন তোমরা জানতে পার যে গরমকাল এসেছে;
২৯ সেইভাবে যখন তোমরা দেখবে এই সব ঘটছে তখন বুঝতে হবে যে, তাঁর আসার সময় এগিয়ে এসেছে, এমনকি, দরজায় হাজির।
৩০ আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যতক্ষণ না এই সব কিছু ঘটবে ততক্ষণ পর্যন্ত কিছু লোক বেঁচে থাকবে।
৩১ আকাশ ও পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আমার বাক্য চিরকাল থাকবে।
অজানা দিন ও সময়।
৩২ কিন্তু সেই দিন বা সেই সময়ের কথা কেউ জানে না; স্বর্গের দূতেরাও না, ছেলে ও না, শুধু বাবাই জানেন।
৩৩ সাবধান হও, জেগে থাক ও প্রার্থনা করো; কারণ সেই সময় কখন আসবে তা তোমরা জান না।
৩৪ এটা ঠিক যেন, একজন লোক নিজের বাড়ি ছেড়ে কোথাও ভ্রমণে গিয়েছেন; আর তিনি নিজের চাকরদের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিলেন এবং দারোয়ানকে জেগে থাকতে আদেশ দিলেন, এইভাবে সেই দিন আসবে।
৩৫ অতএব তোমরাও এইভাবে জেগে থাকো, কারণ বাড়ির কর্তা সন্ধ্যায়, কি দুপুররাতে, কি মোরগ ডাকার সময়, কি সকালবেলায় আসবেন তোমরা তা জান না;
৩৬ তিনি হঠাৎ এসে যেন না দেখেন তোমরা ঘুমিয়ে আছ।
৩৭ আর আমি তোমাদের যা বলি, সবাইকেই তা বলি, জেগে থাকো।