সত্যিকারের দানের বিষয়ে শিক্ষা
২১
১ পরে তিনি চোখ তুলে দেখলেন, ধনবানেরা ভান্ডারে নিজের নিজের দান রাখছে। ২ আর তিনি দেখলেন এক গরিব বিধবা সেখানে দুটি পয়সা রাখছে; ৩ তখন তিনি বললেন, আমি তোমাদের সত্য বলছি, এই গরিব বিধবা সবার থেকে বেশি দান রেখেছে। ৪ কারণ এরা সবাই নিজের নিজের বাড়তি টাকা থেকে কিছু কিছু দানের মধ্যে রাখল, কিন্তু এ নিজের অনাটন সত্ত্বেও এর যা কিছু ছিল, সবই রাখল।
যিরুশালেমের বিনাশ ও নিজের দ্বিতীয় আগমনের বিষয়ে শিক্ষা
৫ আর যখন কেউ কেউ ঈশ্বরের গৃহের বিষয়ে বলছিলেন, ওটা কেমন সুন্দর সুন্দর পাথরে ও উত্সর্গীকৃত জিনিসে সুশোভিত, তিনি বললেন, ৬ “তোমরা এই যে সব দেখছ, এমন সময় আসছে, যখন এর একখানি পাথর অন্য পাথরের উপরে থাকবে না, সমস্তই ধ্বংস হবে।” ৭ তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে গুরু, তবে এসব ঘটনা কখন হবে? আর যখন এসব ঘটনা ঘটবে তখন তার চিহ্নই বা কি?” ৮ তিনি বললেন, দেখ, ভ্রান্ত হয়ো না; কারণ অনেকে আমার নাম ধরে আসবে, বলবে, আমিই তিনি ও সময় নিকটবর্তী; তোমরা তাদের পিছনে যেও না। ৯ আর যখন তোমরা যুদ্ধের ও গণ্ডগোলের কথা শুনবে, ভয় পাবে না, কারণ প্রথমে এই সব ঘটবেই ঘটবে কিন্তু তখনই শেষ না। ১০ পরে তাদের বললেন, জাতির বিরুদ্ধে জাতি ও রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজ্য উঠবে। ১১ বিশাল বিশাল ভূমিকম্প এবং জায়গায় জায়গায় দূর্ভিক্ষ ও মহামারী হবে, আর আকাশে ভয়ঙ্কর লক্ষণ এবং মহৎ চিহ্ন হবে। ১২ কিন্তু এই সব ঘটনার আগে লোকেরা তোমাদের বন্দি করবে, তোমাদের নির্যাতন করবে, সমাজঘরে ও কারাগারে সমর্পণ করবে; আমার নামের জন্য তোমাদের রাজাদের ও শাসনকর্তাদের সামনে আনা হবে। ১৩ সাক্ষ্যের জন্য এই সব তোমাদের প্রতি ঘটবে। ১৪ অতএব মনে মনে তৈরি থেকো যে, কি উত্তর দিতে হবে, তার জন্য আগে চিন্তা করবে না। ১৫ কারণ আমি তোমাদের এমন কথা ও বুদ্ধি দেব যে, তোমাদের বিপক্ষেরা কেউ প্রতিরোধ করতে কি উত্তর দিতে পারবে না। ১৬ আর তোমরা বাবা মা, ভাই, আত্মীয় ও বন্ধুদের দ্বারা সমর্পিত হবে এবং তোমাদের কাউকে কাউকেও তারা মেরে ফেলবে। ১৭ আর আমার নামের জন্য তোমরা সবার ঘৃণার পাত্র হবে। ১৮ কিন্তু তোমাদের মাথার একটা চুল নষ্ট হবে না। ১৯ তোমরা নিজেদের ধৈর্য্যে নিজেদের প্রাণরক্ষা করবে। ২০ আর যখন তোমরা যিরুশালেমকে সৈন্যসামন্ত দিয়ে ঘেরা দেখবে, তখন জানবে যে, তার ধ্বংস নিকটবর্তী। ২১ তখন যারা যিহূদিয়ায় থাকে, তারা পাহাড়ি অঞ্চলে পালিয়ে যাক এবং যারা শহরের মধ্যে থাকে, তারা বাইরে যাক; আর যারা গ্রামাঞ্চলে থাকে, তারা শহরে না আসুক। ২২ কারণ তখন প্রতিশোধের সময়, যে সব কথা লেখা আছে সে সব পূর্ণ হবার সময়। ২৩ হায়!, সেই সময়ে গর্ভবতী ও স্তন্যদাত্রী স্ত্রীলোকদের ভয়ঙ্কর দুর্দশা! কারণ ভূমিতে মহাসংকট এবং এই জাতির ওপর ক্রোধ নেমে আসবে। ২৪ লোকেরা তরবারির আঘাতে মারা পড়বে; এবং বন্দি হয়ে সকল অইহূদির মধ্যে সমর্পিত হবে; আর অইহূদিদের সময় সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত যিরুশালেম সব জাতির কাছে পদদলিত হবে। ২৫ আর সূর্য্যে, চাঁদে ও তারকামন্ডলে নানা চিহ্ন দেখা যাবে এবং পৃথিবীতে সমস্ত জাতি কষ্টে ভুগবে, তারা সমুদ্রের ও ঢেউয়ের গর্জনে উদ্বিগ্ন হবে। ২৬ ভয়ে এবং পৃথিবীতে যা যা ঘটবে তার আশঙ্কায়, মানুষেরা অজ্ঞান হয়ে যাবে; কারণ আকাশের সব শক্তি বিচলিত হবে। ২৭ আর সেই সময়ে তারা মানবপুত্রকে পরাক্রম ও মহা প্রতাপের সঙ্গে মেঘযোগে করে আসতে দেখবে। ২৮ কিন্তু এসব ঘটনা শুরু হলে তোমরা উপরের দিকে তাকিও। মাথা তোল, কারণ তোমাদের মুক্তি আসন্ন। ২৯ আর তিনি তাদেরকে একটি গল্প বললেন, ডুমুরগাছ ও আর সব গাছ দেখ; ৩০ যখন সেগুলির নতুন পাতা গজায়, তখন তা দেখে তোমরাই নিজেরাই বুঝতে পার যে, এখন গরমকাল নিকটবর্তী। ৩১ সেইভাবে তোমরাও যখন এই সব ঘটছে দেখবে, তখন জানবে, ঈশ্বরের রাজ্য নিকটবর্তী। ৩২ আমি তোমাদের সত্য বলছি, যে পর্যন্ত এসব পূর্ণ না হয়, সেই পর্যন্ত এই কালের লোকদের মৃত্যু হবে না। ৩৩ আকাশের ও পৃথিবীর বিনাশ হবে, কিন্তু আমার বাক্যের বিনাশ কখনও হবে না। ৩৪ কিন্তু নিজেদের বিষয়ে সাবধান থেকো, রোগে ও ভোগবিলাসে এবং কাজের চিন্তায় তোমাদের হৃদয় যেন ভারাক্রান্ত না হয় এবং জীবনে যেন ভয় না আসে, আর সেই দিন হঠাৎ ফাঁদের মতো তোমাদের ওপরে এসে পড়বে; ৩৫ কারণ সেই দিন সমস্ত পৃথিবীর লোকের উপরে আসবে। ৩৬ কিন্তু তোমরা সব সময়ে জেগে থেকো এবং প্রার্থনা করো, যেন এই যেসব ঘটনা ঘটবে, তা এড়াতে এবং মানবপুত্রের সামনে দাঁড়াতে, শক্তিমান হও। ৩৭ আর তিনি প্রতিদিন মন্দিরে উপদেশ দিতেন এবং প্রতিরাতে বাইরে গিয়ে জৈতুন নামে পর্বতে গিয়ে থাকতেন। ৩৮ আর সব লোক তাঁর কথা শুনবার জন্য খুব ভোরে মন্দিরে তাঁর কাছে আসত।