১ তৃতীয় মাসে মিশর দেশ থেকে ইস্রায়েল সন্তানরা বের হয়ে যাবার পর, সেই প্রথম দিনেই তারা সীনয়ের মরুভূমিতে উপস্থিত হল। ২ তাঁরা রফীদীম থেকে যাত্রা করে সীনয়ের নির্জন মরুঅঞ্চলে উপস্থিত হলে সেই জায়গায় তারা শিবির তৈরী করল। ৩ পরে মোশি ঈশ্বরের কাছে গেলেন, আর সদাপ্রভু পর্বত থেকে তাঁকে ডেকে বললেন, “তুমি যাকোবের বংশকে এবং ইস্রায়েল সন্তানদেরকে এই কথা জানাও, ৪ ‘আমি মিশরীয়দের প্রতি যা করেছি এবং যেমন ভাবে ঈগল পাখীর ডানা দিয়ে বহন করেছি এবং আমার কাছে নিয়ে এসেছি, তা তোমরা দেখেছ। ৫ এখন যদি তোমরা আমার রব শোন এবং আমার নিয়মগুলি মেনে চলো, তবে তোমরা সব জাতির থেকে আমার নিজস্ব অধিকার হবে, কারণ পৃথিবীর সবকিছুই আমার; ৬ আর আমার জন্য তোমরা যাজকদের এক রাজ্য এবং এক পবিত্র জাতি হবে।’ এই সব কথাগুলি তুমি অবশ্যই ইস্রায়েল সন্তানদের বলবে।” ৭ তখন মোশি আসলেন এবং লোকদের প্রাচীনদেরকে ডাকলেন ও সদাপ্রভু তাঁকে যা যা আদেশ করলেন, সেই সব কথা তাঁদের সামনে উপস্থিত করলেন। ৮ তাতে লোকেরা সবাই একত্রে উত্তর দিয়ে বলল, সদাপ্রভু যা কিছু বলেছেন, আমরা সবই করব। তখন মোশি সদাপ্রভুর কাছে লোকদের বিষয়ে আবেদন করলেন।

৯ সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখ, আমি ঘন মেঘে তোমার কাছে আসব, যখন তোমার সঙ্গে আমি কথা বলব লোকেরা যেন শুনতে পায় এবং তোমাতেও সর্বদা বিশ্বাস করে।” তখন মোশি লোকদের কথা সদাপ্রভুকে বললেন। ১০ সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, তুমি লোকদের কাছে গিয়ে আজ ও কাল তাঁদেরকে পবিত্র কর, (আমার আসার জন্য তাদের তৈরী কর) এবং তাঁরা নিজের নিজের কাপড় পরিষ্কার করুক, ১১ আর তৃতীয় দিনের জন্য সবাই তৈরী থাকুক; কারণ তিন দিনের দিনে আমি সদাপ্রভু, সব লোকের সামনে সীনয় পর্বতের উপরে নেমে আসবেন। ১২ আর তুমি লোকদের জন্য চারদিকে সীমানা তৈরী করে তাদের এই কথা বলো, “তোমরা সাবধান থাক যে, তোমরা পর্বতে যাবে না এবং তাঁর সীমানা স্পর্শ করো না; যে কেউ পর্বত স্পর্শ করবে তাঁর মৃত্যুদণ্ড অবশ্যই হবে। ১৩ কারও হাত তাকে স্পর্শ করবে না, কিন্তু সে অবশ্য পাথরের আঘাতে মারা যাবে, কিংবা তীর দিয়ে বিদ্ধ হবে; পশু হোক বা মানুষ হোক, সে বাঁচবে না। যখন বেশীক্ষণ তূরীবাদ্য হবে তাঁরা হয়তো পায়ে হেঁটে পর্বতে উঠবে।” ১৪ পরে মোশি পর্বত থেকে নেমে লোকদের কাছে এসে লোকদেরকে পবিত্র করলেন এবং তাঁরা নিজের নিজের কাপড় পরিষ্কার করল। ১৫ পরে তিনি লোকদেরকে বললেন, “তোমরা তৃতীয় দিনের জন্য তৈরী হও; তোমার স্ত্রীর কাছে যেও না।” ১৬ পরে তৃতীয় দিনে সকাল হলে মেঘগর্জন ও বিদ্যুৎ এবং পর্বতের উপরে ঘন মেঘ জমলো, আর খুব জোরে তূরীধ্বনি হতে লাগল; তাতে শিবিরের সমস্ত লোক কাঁপতে লাগল। ১৭ পরে মোশি ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা করার জন্য লোকদেরকে শিবির থেকে বের করে দিলেন, আর তারা পর্বতের নিচে দাঁড়িয়ে থাকলো। ১৮ সীনয় পর্বত সম্পূর্ণ ভাবে ধোঁয়ায় ঢেকে গেল, কারণ সদাপ্রভু আগুন এবং ধোঁয়ার সঙ্গে তার উপরে নেমে আসলেন, আর ভাঁটার ধোঁয়ার মত তা থেকে ধোঁয়া উঠতে লাগল এবং সমস্ত পর্বত খুব কাঁপতে লাগল। ১৯ আর তূরীর শব্দ ক্রমাগত খুব বাড়তে লাগল; তখন মোশি কথা বললেন এবং ঈশ্বর বাণীর মাধ্যমে তাঁকে উত্তর দিলেন। ২০ আর সদাপ্রভু সীনয় পর্বতে, পর্বতের চূড়ায়, নেমে আসলেন এবং সদাপ্রভু মোশিকে সেই পর্বতের চূড়ায় ডাকলেন; তাতে মোশি উঠে গেলেন। ২১ তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি নেমে গিয়ে লোকেদেরকে সতর্ক কর, পাছে তারা দেখার জন্য সীমানা লঙ্ঘন করে সদাপ্রভুর দিকে যায় ও তাদের অনেকে বিনষ্ট হয়। ২২ আর যাজকরা, যারা সদাপ্রভুর কাছাকাছি থাকে, তারাও নিজেদেরকে পবিত্র করুক, না হলে সদাপ্রভু তাদেরকে আঘাত করেন।” ২৩ তখন মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “লোকেরা সীনয় পর্বতে উঠে আসতে পারে না, কারণ তুমি দৃঢ় ভাবে আদেশ দিয়ে তাদেরকে বলেছ, পর্বতের সীমানা নির্ধারণ কর ও তা পবিত্র কর।” ২৪ আর সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “যাও, পর্বত থেকে নেমে যাও; পরে হারোণকে সঙ্গে নিয়ে তুমি উঠে এসো, কিন্তু যাজকরা ও লোকেরা সদাপ্রভুর কাছে উঠে আসার জন্য সীমানা লঙ্ঘন না করুক, না হলে তিনি তাদেরকে আঘাত করেন।” ২৫ তখন মোশি লোকেদের কাছে নেমে গিয়ে তাদেরকে এই সব কথা বললেন।