১১
অথলিয়া রাণীর নিষ্ঠুরতা ও তার ফলাফল।
১ ইতিমধ্যে অহসিয়ের মা অথলিয়া যখন দেখল যে, তার ছেলে মারা গেছে, তখন সে উঠে সমস্ত রাজবংশকে ধ্বংস করল। ২ কিন্তু রাজা যোরামের মেয়ে, অহসিয়ের বোন যিহোশেবা, অহসিয়ের ছেলে যোয়াশকে নিয়ে, নিহত রাজপুত্রদের মধ্য থেকে চুরি করে নিয়ে তাঁর ধাত্রীর সঙ্গে একটি শোবার গৃহে রাখলেন; তাঁরা অথলিয়ার কাছ থেকে তাঁকে লুকিয়ে রাখলেন, তাই তিনি মারা যান নি। ৩ আর তিনি তাঁর সঙ্গে ছয় বছর সদাপ্রভুর গৃহে লুকানো অবস্থায় ছিলেন; তখন দেশে অথলিয়া রাজত্ব করছিল। ৪ পরে সপ্তম বছরে যিহোয়াদা লোক পাঠিয়ে রক্ষীদলের ও পাহারাদারদের শতপতিদের ডেকে সদাপ্রভুর গৃহে তাদের কাছে আনলেন এবং তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করে সদাপ্রভুর গৃহে তাদেরকে শপথ করিয়ে রাজপুত্রকে দেখালেন। ৫ আর তিনি তাদের আদেশ দিয়ে বললেন, “তোমাদের যা করতে হবে তা এই, তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্রামবারে আসবে, তাদের তিন ভাগের এক ভাগ রাজবাড়ী পাহারা দেবে; ৬ এক ভাগ সূর ফটকে থাকবে এবং এক ভাগ পাহারাদারদের পিছনের ফটকে থাকবে। এইভাবে তোমরা আক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য গৃহে পাহারা দেবে। ৭ আর তোমাদের সবার, দুই দল রাজার সামনে সদাপ্রভুর গৃহে বিশ্রামবারে পাহারা দেবে। ৮ তোমরা প্রত্যেকে নিজের অস্ত্র হাতে নিয়ে রাজার চারপাশ ঘিরে থাকবে; আর যে কেউ সারির ভিতরে আসে, সে নিহত হবে এবং রাজা যখন বাইরে যান বা ভিতরে আসেন, তখন তোমরা তাঁর সঙ্গে থাকবে।” ৯ পরে যিহোয়াদা যাজক যা আদেশ করলেন, শতপতিরা তাই করল। তার ফলে তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের লোকদের নিয়ে, যারা বিশ্রামবারে ভিতরে যাওয়া আসা করে, তাদের নিয়ে যিহোয়াদা যাজকের কাছে আসল। ১০ পরে দায়ূদ রাজার যে সব বর্শা ও ঢাল সদাপ্রভুর গৃহে ছিল, সেগুলি যাজক নিয়ে শতপতিদের হাতে দিলেন। ১১ আর গৃহের ডান দিক থেকে বাম দিক পর্যন্ত যজ্ঞবেদীর ও গৃহের কাছে পাহারাদার সৈন্যরা প্রত্যেকে নিজের অস্ত্র হাতে রাজার চারিদিকে দাঁড়াল। ১২ পরে তিনি রাজপুত্রকে বের করে এনে তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিয়ে তাঁর হাতে ব্যবস্থার বইটি দিলেন এবং তাঁরা তাঁকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন; আর হাততালি দিয়ে বললেন, “রাজা চিরজীবী হোন।” ১৩ তখন পাহারাদার ও লোকদের চিৎকার শুনে অথলিয়া সদাপ্রভুর গৃহে লোকদের কাছে এল; ১৪ আর দেখল যে, নিয়ম অনুসারে রাজা মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন। সেনাপতিরা ও তূরী বাদকেরা রাজার পাশে রয়েছে এবং দেশের সব লোক আনন্দ করছে ও তূরী বাজাচ্ছে। তখন অথলিয়া তার পোশাক ছিঁড়ে চিৎকার করে বলল, “বিশ্বাসঘাতকতা! বিশ্বাসঘাতকতা!” ১৫ কিন্তু যিহোয়াদা যাজক যাদের উপর সৈন্যদলের ভার ছিল সেই শতপতিদের এই আদেশ দিলেন, “ওকে বের করে দুই সারির মাঝখান দিয়ে নিয়ে যাও; আর যে ওর পিছনে পিছনে যাবে, তাকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করবে,” কারণ যাজক বলেছিলেন, সদাপ্রভুর গৃহের মধ্যে তাকে যেন হত্যা না করা হয়। ১৬ পরে লোকেরা তার জন্য দুই সারি হয়ে পথ ছাড়লে সে ঘোড়া ফটকের পথ দিয়ে রাজবাড়ীতে ঢুকল এবং সেখানে হত হল। ১৭ আর যিহোয়াদা সদাপ্রভুর এবং রাজার ও লোকদের মধ্যে এক চুক্তি করলেন, যেন তারা সদাপ্রভুর প্রজা হয়; রাজা ও লোকদের মধ্যেও একটি চুক্তি করলেন। ১৮ তারপর দেশের সমস্ত লোক বাল দেবতার মন্দিরে গিয়ে সেটা ভেঙ্গে ফেলল এবং তার যজ্ঞবেদী ও মূর্তিগুলি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলল; আর বেদীগুলির সামনে বাল দেবতার যাজক মত্তনকে মেরে ফেলল। পরে যাজক সদাপ্রভুর গৃহে পাহারাদার নিযুক্ত করলেন। ১৯ আর তিনি শতপতিদের, রক্ষীদের, পাহারাদারদের এবং দেশের সব লোকদের সঙ্গে নিলেন; তারা সদাপ্রভুর গৃহ থেকে রাজাকে নিয়ে পাহারাদারদের ফটকের পথ দিয়ে রাজবাড়ীতে এল; আর তিনি সিংহাসনে বসলেন। ২০ তখন দেশের সব লোক আনন্দ করল এবং নগরটি শান্ত হল; আর অথলিয়াকে তারা রাজবাড়ীতে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করেছিল। ২১ যিহোয়াশ সাত বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন।