ভ্রান্ত ভাববাদী হনানিয়
28
1 যিহূদার রাজা সিদিকিয়ের রাজত্ব কালের চতুর্থ বছরের পঞ্চম মাসে ভাববাদী হনানিয় আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| হনানিয় ছিলেন অসূরের পুত্র| হনানিয় ছিলেন গিবিয়োন শহরের বাসিন্দা| প্রভুর মন্দিরে যাজকগণ ও আরো অনেকের উপস্থিতিতে হনানিয় আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন| হনানিয় যা বলেছিলেন তা হল:
2 “ইস্রায়েলের ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন: ‘বাবিলের রাজা যিহূদার লোকদের কাঁধে দাসত্বের যে জোয়াল চাপিয়েছেন তা আমি ভেঙে দেব|
3 বাবিলের রাজার দ্বারা প্রভুর মন্দির থেকে যে সমস্ত জিনিষ লুঠ হয়ে গিয়েছিল তার প্রত্যেকটি জিনিষ আমি দুবছরের মধ্যে তাদের জায়গায় ফেরৎ নিয়ে আসব| নবূখদ্রিত্সর বাবিলে যা কিছু নিয়ে গিয়েছে আমি সেগুলো জেরুশালেম দেশে ফেরৎ নিয়ে আসব|
4 যিহূদার রাজা যিহোয়াকীণকে, যে যিহোয়াকীমের পুত্র, তাকেও এখানে ফিরিয়ে আনব| বাবিলের রাজা যিহূদার যে সমস্ত মানুষকে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়েছিল তাদের সবাইকে আমি আবার যিহূদায় ফিরিয়ে আনব| আমি যিহূদার লোকদের বাবিলের রাজার দাসত্ব থেকে মুক্তি দেব|’”
5 প্রভুর মন্দিরে দাঁড়িয়ে যাজক ও অন্যান্য লোকদের উপস্থিতিতে ভাববাদী যিরমিয়, ভাববাদী হনানিয়কে উত্তর দিল|
6 যিরমিয় হনানিয়কে বলল, “আমেন! আমি আশা করি তুমি প্রভুর নামে যে বার্তা প্রচার করেছো তা প্রভু সত্যি করে তুলবেন| আমি আশা করি প্রভু সব কিছু আবার ফিরিয়ে আনবেন| আশা করি তিনি ফিরিয়ে আনবেন উপাসনাগৃহের লুণ্ঠিত জিনিসপত্র এবং বাবিলে দাসত্ব করা যিহূদার সমস্ত লোকদের|
7 “কিন্তু আমাকে যা বলতেই হবে তা শোন, হনানিয় শোন, শোন উপস্থিত লোকরা|
8 হনানিয় তোমার অনেক আগে আরও অনেক ভাববাদী ছিলেন এবং আমি ভাববাদী হতে পারতাম| তারা প্রচার করেছিল অনেক দেশগুলিকে যুদ্ধ, অনাহার, মহামারী গ্রাস করবে| অনেক মহৎ রাজ্যের বিরুদ্ধেও তারা এধরণের ভাববাণী দিয়েছিল|
9 কিন্তু যে ভাববাদীরা শান্তির ভাববাণী প্রচার করে, সেই ভাববাণীগুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে যে সত্যিই সেগুলি প্রভুর পাঠানো কিনা| সত্যি হলেই বোঝা যাবে যে সেই ভাববাদী সত্যি সত্যিই প্রভুর দ্বারা প্রেরিত| যদি কোন ভাববাদীর বাণী সঠিক হয় তাহলে মানুষকে বুঝতে হবে ঐ ভাববাদী প্রভুর দ্বারা প্রেরিত|”
10 যিরমিয় একটি জোয়াল তার নিজের কাঁধে চাপাচ্ছিল| আর তখন সেই জোয়াল ভাববাদী হনানিয় যিরমিয়র কাঁধ থেকে সরিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলল|
11 হনানিয় চিৎকার করে সবাইকে শুনিয়ে বলে উঠেছিলেন, “প্রভু বলেছেন: ‘এই ভাবে ঠিক আমি বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরের দাসত্বের জোয়াল ভেঙে ফেলব| সমস্ত পৃথিবীর কাঁধে সে যে দাসত্বের জোয়াল চাপিয়েছে আমি তা দু বছরের মধ্যেই ভেঙে ফেলব|’”
হনানিয়র এই কথা শেষ হওয়ার পর যিরমিয় উপাসনাগৃহ ত্যাগ করে চলে গেল|
12 হনানিয় যিরমিয়র কাঁধ থেকে জোয়ালটি তুলে নেওয়ার পর এবং সেটি ভাঙ্গবার পর প্রভু যিরমিয়র সঙ্গে কথা বললেন|
13 প্রভু যিরমিয়কে বললেন, “যাও হনানিয়কে গিয়ে বলো প্রভু বলেছেন: ‘তুমি একটি কাঠের জোয়াল ভেঙেছ| এবার আমি লোহার জোয়াল তৈরী করব|’
14 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সর্বশক্তিমান প্রভু বললেন, ‘আমি প্রত্যেকটি দেশকে লোহার জোয়ালে বাঁধ্ব| তারপর আমি এই সব জাতিগুলিকে দিয়ে বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্সরকে সেবা করাব| আমি নবূখদ্রিত্সরকে বন্য পশুদেরও শাসন করার ক্ষমতা দেব|’”
15 ভাববাদী যিরমিয় তখন ভাববাদী হনানিয়কে বলেছিল, “শোন হনানিয়! তোমাকে প্রভু পাঠান নি| কিন্তু তুমি যিহূদার লোকদের মিথ্যাকে বিশ্বাস করতে শিখিয়েছো|
16 তাই প্রভু বলেছেন, ‘শীঘ্রই আমি তোমাকে এই পৃথিবীর বাইরে সরিয়ে দেব হনানিয়| তোমার এবছরেই মৃত্যু হবে| কেন? কারণ তুমি লোকদের প্রভুর বিরুদ্ধে যাবার শিক্ষা দিয়েছো|’”
17 হনানিয় সেই বছরেই সপ্তম মাসে মারা গিয়েছিলেন|